ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব

বিপ্লবী ভগৎ সিং

  • ভগৎ সিং – এর বিপ্লবী জীবনের সূচনা হয় চন্দ্রশেখর আজাদের হিন্দুস্তান রিপাবলিকান পার্টির সদস্যপদ গ্রহণ করার পর ।
  • তিনি নিজে ‘ নওজোয়ান ভারত সভা ‘ নামে একটি যুব সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন ( ১৯২৫ খ্রি. ) ।
  • লাহােরে সাইমন কমিশন বিরােধী এক মিছিলের নেতৃত্বদানকালে প্রবীণ জননেতা লাজপত রায় পুলিশের লাঠির আঘাতে গুরুতরভাবে আহত হয়ে পরে হাসপাতালে মারা যান । লালাজির মৃত্যুর প্রতিশােধ নিতে ভগৎ সিং লাহােরের কুখ্যাত পুলিশ অফিসার স্যান্ডার্সকে গুলি করে হত্যা করেন ( ১৭ নভেম্বর , ১৯২৮ খ্রি. ) ।
  • ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ৮ এপ্রিল দিল্লির কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভায় জনস্বার্থবিরোধী ‘ ট্রেড ডিসপিউট বিল ’ ও ‘ পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট ‘ নিয়ে আলােচনার সময় দর্শক আসন থেকে ভগৎ সিং ও বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত দুটি বােমা ফাটিয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং ইনকিলাব জিন্দাবাদ ধ্বনি সহ লাল – ইস্তাহার বিলি করে বিপ্লবের ডাক দেন ও বিপ্লবের আদর্শ প্রচার করেন ।
  • লাহাের ষড়যন্ত্র মামলা ( ১৯২৯ খ্রি. ) র বিচারে স্যান্ডার্স হত্যাকাণ্ডের দায়ে ভগৎ সিং – এর ফাঁসি হলে ( ২৩ মার্চ , ১৯৩১ খ্রি. ) সারা দেশে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয় ।
  • ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে ভগৎ সিং চেঁচিয়ে বলেন ‘ ইনকিলাব জিন্দাবাদ ’ ( বিপ্লব দীর্ঘজীবী হােক ) ।

লালা লাজপত রায় ( ১৮৬৫ – ১৯২৮ খ্রি. )

  • লালা লাজপত রায় পাঞ্জাবের লুধিয়ানা জেলার জারগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ( ১৮৬৫ খ্রি. ) ।
  • জাতীয় কংগ্রেসের এলাহাবাদ অধিবেশনে ( ১৮৮৮ খ্রি. ) তিনি যােগ দেন ।
  • এলাহাবাদ অধিবেশনে নরমপন্থী নেতাদের আবেদন – নিবেদন নীতি তাঁর কাছে ভিক্ষা বৃত্তিই মনে হয় । অচিরেই তিনি কংগ্রেসের এক চরমপন্থী নেতারূপে আত্মপ্রকাশ করেন ।
  • ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে তিনি কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন ।
  • অসহযােগ আন্দোলনে যােগদান করায় তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয় ( ১৯২১ খ্রি. ) ।
  • অসহযােগ আন্দোলন প্রত্যাহৃত হলে চিত্তরঞ্জন ও মােতিলাল প্রতিষ্ঠিত স্বরাজ্য দলে তিনি যােগদান করেন ।
  • ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে লাহােরে সাইমন কমিশন বিরােধী এক বিক্ষোভ মিছিল পরিচালনাকালে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশের বেটনের নির্মম আঘাতে আহত লালাজি কয়েকদিন পরে মারা যান ।
  • উর্দু ভাষায় তিনি রচনা করেন ম্যাৎসিনি , গ্যারিবল্ডি ও শিবাজির জীবনকাহিনি । এ ছাড়াও তাঁর রচিত ‘ ইয়ং ইন্ডিয়া ’ , ‘ ইংল্যান্ডস ডেট টু ইন্ডিয়া ’ , ‘ দি পলিটিক্যাল ফিউচার অব ইন্ডিয়া ’ গ্রন্থগুলি জাতীয়তাবাদ প্রসারে সাহায্য করে ।
  • নেতা হিসেবে তাঁর সংগ্রামী মানসিকতার জন্য ‘ শের-ই-পাঞ্জাব ’ বা ‘ পাঞ্জাব কেশরি ’ বা পাঞ্জাবের সিংহ নামে তাঁকে অভিহিত করা হয় ।

বালগঙ্গাধর তিলক

  • ভারতের চরমপন্থী আন্দোলনের পথ প্রদর্শক ছিলেন বালগঙ্গাধর তিলক ।
  • জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতারূপে তিলকই প্রথম বলেন — স্বরাজ আমার জন্মগত অধিকার , আমি তা অর্জন করবই ( ‘ Swaraj is my birth right , and I will have it ‘ ) ।
  • ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত ‘মারহাট্টা’ ( ১৮৯৫ খ্রি. ) ও মারাঠি ভাষায় প্রকাশিত ‘কেশরী’ ( ১৮৯৪ খ্রি. ) নামে দুটি সাপ্তাহিক পত্রিকার মাধ্যমে শিক্ষিত মারাঠি যুবকদের মধ্যে বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে দেন ।
  • তিলক গণপতি( ১৮৯৩ খ্রি. ) ও শিবাজি(১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে) উৎসবের দ্বারা ভারতের জনগণের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন ।
  • তিলক ছিলেন ভারতীয় বিপ্লববাদের জনক ।
  • ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে মজঃফরপুরে কিংসফোর্ডকে হত্যার উদ্দেশ্যে ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকীর বােমা নিক্ষেপের ঘটনাকে সমর্থন করে প্রবন্ধ প্রকাশ করলে রাজদ্রোহিতার অভিযােগে তাকে দীর্ঘ ৬ বছরের জন্য মান্দালয়ের জেলে নির্বাসনদণ্ড দেওয়া হয় ।
  • তিলক বােম্বাইয়ের প্রাদেশিক সভায় হােমরুল লিগ গঠন করেন ( ১৯১৬ খ্রি. এপ্রিল ) ।
  • দেশের জন্য তাঁর আত্মত্যাগে মুগ্ধ হয়ে দেশবাসী তিলককে লােকমান্য উপাধিতে ভূষিত করে ।
  • তিনি ছিলেন ভারতের সংগ্রামশীল জাতীয়তাবাদের পথিকৃৎ ।

বিপিনচন্দ্র পাল

  • ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে শ্রীহট্টের পইল গ্রামে বিপিনচন্দ্র পাল জন্মগ্রহণ করেন ।
  • প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করার পর উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভরতি হন । ছাত্র জীবনের প্রথম দিকে তিনি ব্রাহ্ম সমাজের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন ।
  • স্বাধীনতা অর্জনের জন্য তিনি ‘ নিষ্ক্রিয় প্রতিরােধ ’ কর্মপন্থা ( Passive Resistance )-র প্রবর্তক ছিলেন । ‘ বন্দেমাতরম ‘ পত্রিকায় তিনি নিষ্ক্রিয় প্রতিরােধের আদর্শ প্রচার করেন ।
  • কিছুদিনের মধ্যেই তিনি রাজনৈতিক গুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রাজনৈতিক দীক্ষা লাভ করেন এবং জাতীয় আন্দোলনের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে নেন ।
  • এসময় তিনি আনন্দ মােহন বসু ও দ্বারকানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্পর্শে এসে নরমপন্থী রাজনীতির প্রতি অনুরক্ত হন ।
  • বিপিনচন্দ্র ‘ নিউ ইন্ডিয়া ’ পত্রিকার মাধ্যমে স্বদেশবাসীকে আত্মনির্ভরশীল হতে বলেন ।
  • ‘ কায়স্থ সমাচার ’ পত্রিকায় দুটি প্রবন্ধ রচনার মাধ্যমে তিনি কারিগরি শিক্ষা ও শিল্পে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব দেন ।
  • মাদ্রাজের জাতীয়তাবাদী নেতা চিদাম্বরম পিল্লাই তাঁকে ‘ স্বাধীনতার সিংহ ’ উপাধি দেন ।
  • ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুতে ভারতবাসী এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ জাতীয় নেতাকে হারায় ।

মাস্টারদা সূর্য সেন

  • ‘ মৃত্যু কিংবা স্বাধীনতা ’ এই মন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন চট্টগ্রামের উমাতারা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক সূর্যকুমার সেন ( ১৮৯৩-১৯৩৪ খ্রি. ) বা ‘ মাস্টারদা ‘ ।
  • ১৯১৮ সালে জাতীয় কংগ্রেসের চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি হন।
  • গণেশ ঘােষ , অনন্ত সিংহ , লােকনাথ বল প্রমুখের সাহায্যে মাস্টারদা গঠন করেন সমরবাহিনী — ‘ ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি ’।
  • তাঁর নেতৃত্বে ১৯৩০ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করা হয় এবং অস্ত্রাগার চত্ত্বরে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করে বিপ্লবীরা জালালাবাদ পাহাড়ে আশ্রয় নেয়।
  • পুলিশবাহিনী জালালাবাদ পাহাড় ঘিরে ফেলে ( ১৯৩০ খ্রি. ২০ এপ্রিল ) । বিপ্লবীরা তিনদিন না খেয়ে আত্মগােপন করে থাকেন । ২২ এপ্রিল বিকেল ৫ টার পর পুলিশ আক্রমণ শুরু করলে বিপ্লবীরা গেরিলা যুদ্ধ কৌশল অবলম্বন করে মােকাবিলা শুরু করে । রাত্রি ৮ টা পর্যন্ত প্রায় তিন ঘণ্টা গুলি বিনিময়ের পর পুলিশ বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয় । বিপ্লবীরা ৬৪ জন ব্রিটিশ সৈন্যকে খতম করে । নরেশ রায় , ত্রিগুণা সেন , পুলিন ঘােষ , জিতেন দাশগুপ্ত , মধু দত্ত , মতি কানুনগাে , বিধু ভট্টাচার্য , প্রভাস বল , শশাঙ্ক দত্ত ও তেরাে বছরের কিশাের হরিগােপাল বল ( টেগরা ) শহিদ হন ।
  • মাস্টারদার নির্দেশে প্রীতিলতার নেতৃত্বে বিপ্লবীরা ২৪ সেপ্টেম্বর রাত্রি ১০ টায় ক্লাবঘরে হানা দেন ।
  • ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি রাতে এক বিশ্বাসঘাতকের চক্রান্তে ব্রিটিশের হাতে ধরা পড়েন ।
  • বিচারে ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের ১৩ জানুয়ারি ভাের পাঁচটায় সূর্য সেন ও তারকেশ্বর দস্তিদারের ফাঁসি হয় ।

বাঘাযতীন (Bagha Jatin)

  • যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের (বাঘ যতীন) নেতৃত্বে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে আগস্ট কলকাতার ধর্মতলায় 'রডা এন্ড কোম্পানি' -এর দোকান থেকে বিপ্লবীরা ৫০টি মাউজার পিস্তল ও ৪৬০০ রাউন্ড কার্তুজ লুঠ করেন ।
  • এরপর বাঘাযতীন ওড়িশার বালেশ্বরে এসে 'ইউনিভার্সাল এম্পোরিয়াম' গঠন করে আত্মগোপন করেন ।
  • বুড়িবালামের যুদ্ধ:প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ভারতীয় বিপ্লবীদের জন্য বিদেশ থেকে অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সি.আর.মার্টিন নাম নিয়ে বাটাভিয়ার যান ও জার্মানির সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে কনসাল ম্যাভেরিক, অ্যানি লার্সেন ও হেনরি-এস নামে তিনটি অস্ত্রবোঝাই জাহাজ একটি হাতিয়ায়, একটি সুন্দরবনের রায়মঙ্গলে এবং একটি ওড়িশার বালেশ্বর উপকূলের উদ্দেশ্যে পাঠান । কিন্তু ইংরেজ সরকার এই অস্ত্র আমদানির কথা জানতে পেরে 'মাভেরিক' সহ অস্ত্রবোঝাই তিনখানি জাহাজই আটক করেন ।পুলিশ কমিশনার চার্লস টেগার্ট বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে বলেশ্বরের উদ্দেশ্যে রওনা হন ও বুড়িবালামের তীরে অপেক্ষারত বাঘাযতীনের বাহিনীকে ঘিরে ফেলে । বালেশ্বর থেকে ত্রিশ মাইল দূরে কাপ্তিপোদা নামক স্থানে ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে ৯ই সেপ্টেম্বর উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই হয় । স্থানটি বুড়ীবালামের তীরে বলে এটি বুড়ীবালামের যুদ্ধ নামে খ্যাত । ২০ মিনিটের গুলিযুদ্ধে বাঘাযতীন গুরুতর আহত হন ও ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ১০ই সেপ্টেম্বর বাঘাযতীন বালেশ্বর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন । ঘটনা স্থলেই চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী মারা যান । বিচারে জ্যোতিষ পালের ১৪ বছর (যাবজ্জীবন) সশ্রম কারাদন্ড হয় এবং আহত মনোরঞ্জন সেনগুপ্ত ও নীরেন দাশগুপ্তের ফাঁসি হয় ।

বিনয় বাদল দীনেশ

  • বিনয় বসু , বাদল গুপ্ত , দীনেশ গুপ্ত ইতিহাসে বিনয় , বাদল , দীনেশ বা ‘ বি-বা-দী ’ নামে পরিচিত ।
  • বিনয় বসু ছিলেন ঢাকার মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ।
  • তিনি ঢাকার মিডফোর্ড হাসপাতালের ভেতর ঢুকে কুখ্যাত দুই ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার লেমেন ও হার্ডসনকে গুলি করেন । এতে লেমেন মারা যান ও হার্ডসন গুরুতর আহত হন । এই ঘটনার পর বিনয় গােপনে ঢাকা ত্যাগ করে কলকাতায় চলে আসেন এবং পরে হেমচন্দ্র ঘােষ প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স ( বি. ভি. ) দলের সদস্যপদ গ্রহণ করেন । এই দলেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্তর ।
  • বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিনয় বসু , বাদল গুপ্ত , দীনেশ গুপ্ত ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৮ ডিসেম্বর ব্রিটিশ শাসনের মূলকেন্দ্র রাইটার্স বিল্ডিং ( মহাকরণ ) আক্রমণ করেন ।
  • বিনয় , বাদল , দীনেশ ছদ্মবেশে মহাকরণে দুপুরবেলায় প্রবেশ করেন এবং সােজা দোতলায় উঠে যান ।
  • বিনয় প্রথমে তাঁর নিজের 38 bore rifle থেকে পরপর ছটি গুলি করে কারা বিভাগের ইন্সপেক্টর জেনারেল কর্নেল সিম্পসনকে হত্যা করেন ।
  • এরপর তাঁরা ছােটো একটি তেরঙ্গা জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে বন্দেমাতরম্ ধ্বনি দিতে দিতে পূর্ব দিকের বারান্দা দিয়ে ঢুকতে গেলে রাইটার্সের নেলসন , টাউসেন্ড , প্রেন্টিস , মার প্রমুখ প্রশাসনিক ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ কর্মচারীদের সঙ্গে তাঁদের খণ্ডযুদ্ধ বাধে । অল্পক্ষণের মধ্যেই লালবাজার থেকে আগত এক বিশাল পুলিশবাহিনীর সঙ্গে তাদের গুলি বিনিময় হয় । এই সংঘর্ষ অলিন্দ যুদ্ধ নামে খ্যাত ।
  • রাইটার্স থেকে বেরিয়ে আসা অসম্ভব বুঝতে পেরে তাঁরা তিনজনেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন । বাদল বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন । নিজেদের গুলিতে গুরুতর আহত অবস্থায় বিনয় ও দীনেশকে হাসপাতালে ভরতি করা হয় । সেখানে বিনয় মারা যান । কিন্তু দীনেশ দীর্ঘ চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে উঠলে পরে ( ৭ জুলাই , ১৯৩১ খ্রি. ) তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয় ।

আব্দুল গফফর খান

  • তাঁকে সীমান্ত গান্ধি নামে (Frontier Gandhi) অভিহিত করা হয় ।
  • ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি রাওলাট বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন এবং ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে সীমান্ত প্রদেশে খিলাফৎ আন্দোলন সংগঠিত করেন ।
  • ১৯৩০ – এর জানুয়ারি মাসে গফফর খান ‘ খোদা-ই-খিদমতগার ’ ( ঈশ্বরের সেবক ) নামক একটি দল প্রতিষ্ঠা করেন । এর সদস্যরা সীমান্ত অঞ্চলের প্রাচীন পােশাক লাল রঙের কুর্তা ব্যবহার করত বলে এরা ‘ লাল কোর্তা ’ ( Red Shirt ) নামেও পরিচিত ছিল ।
  • পাঠান হয়েও ভারতীয় জাতীয় আন্দোলনের মূল ধারার সঙ্গে যুক্ত হয়ে অসামান্য কৃতিত্ব দেখানাের জন্যই ভারত সরকার তাঁকে মরণােত্তর ‘ ভারতরত্ন ’ উপাধি দান করেছে ।

ড. বি. আর আম্বেদকর (১৮৯১-১৯৫৬) :

  • ভিমরাও রামােজি ছিলেন মাহার সম্প্রদায়ের লােক।
  • তিনি মধ্যপ্রদেশের মাে (Mhow) নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তার নিজের গ্রামের নামে আম্বেদকর উপাধি নেন।
  • ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে নিউইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যােগ দিয়ে ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে অর্থনীতিতে M.A. পাশ করেন।
  • ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি লণ্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্সে যােগ দিয়ে আইন পড়েন।
  • ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে তিনি M. Sc ও ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে D.Sc ডিগ্রি পান।
  • ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি বম্বে হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন।
  • ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি বােম্বাইয়ে বহিষ্কৃত হিতকারিনী সভা প্রতিষ্ঠা করেন। এটি ছিল একটি ডিপ্রেসড ক্লাসের সংগঠন।
  • ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি মারাঠী পাক্ষিক বহিস্কৃত ভারত’ পত্রিকা প্রকাশ করেন।
  • ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি সমাজসমতা সঙঘ স্থাপন করেন এবং অস্পৃশ্যদের অধিকারের জন্য সত্যাগ্রহ শুরু করেন। তার সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ফলে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে মাহার সম্প্রদায় নাসিকের বিখ্যাত কালরাম মন্দিরে প্রবেশের সুযােগ পায়।
  • ডিপ্রেসড ক্লাসের প্রতিনিধি হিসাবে তিনি বােম্বাই আইন পরিষদের মনােনীত সদস্য ছিলেন ১৯২৬-৩৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে।
  • ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে তিনি জনতা নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন।
  • তিনি তিনটি গােলটেবিল বৈঠকেই ‘যােগ দেন।
  • ব্রিটিশরা কমিউনাল এওয়ার্ড ঘােষণা করলে তিনি গান্ধীর সঙ্গে পুনা চুক্তি করেন ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে।
  • ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইণ্ডিপেণ্ডেন্ট লেবার পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৩৬-৩৭ খ্রিস্টাব্দে বােম্বাই প্রেসিডেন্সির সাধারণ নির্বাচনে তপশিলি জাতির সকল আসন দখল করেন।
  • ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে তিনি সারাভারত তপশিলি জাতি ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা করেন।
  • ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি পিউপিলস এডুকেশান সােসাইটি স্থাপন করেন।
  • ১৯৪২-৪৬ পর্যন্ত তিনি গভর্নর জেনারেলের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন।
  • জওহরলাল নেহেরুর মন্ত্রীসভায় তিনি ছিলেন আইনমন্ত্রী এবং সংবিধান সভার খসড়া কমিটির তিনি ছিলেন চেয়ারম্যান।
  • হিন্দু কোড বিলের খসড়া তিনি করেন। এজন্য তাকে বলা হয় আধুনিক মনু।
  • তার গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল কাস্টস্ ইন ইণ্ডিয়া, পাকিস্তান অথবা ভারত বিভাজন।

যতীন দাস

  • যতীন দাস ম্যাট্রিক পাস করার পর গান্ধিজির ডাকে সাড়া দিয়ে অসহযােগ আন্দোলনে যােগ দেন ।
  • বিপ্লবী শচীন্দ্রনাথ সান্যালের উপদেশ মেনে হিন্দুস্তান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনে যােগ দেন ।
  • হিন্দুস্তান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনে যুক্ত থাকাকালীন বােমা তৈরির অপরাধে তাঁর জেল হয় ( ১৯২৫ খ্রি. ) ।
  • সর্দার ভগৎ সিং , বটুকেশ্বর দত্ত , শুকদেব , রাজগুরুর সঙ্গে লাহাের ষড়যন্ত্র মামলায় ( ১৯২৯ খ্রি. ) তিনিও লাহােরের বােরস্টল জেলে বন্দি ছিলেন ।
  • জেলে বন্দিদের প্রতি দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে ও তাঁদের যুদ্ধবন্দি হিসেবে গণ্য করার দাবিতে যতীন দাসসহ বন্দিরা অনশন শুরু করেন ।
  • ৬৪ দিন পরে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন ।
  • যতীন্দ্রনাথ দাস প্রথম বিপ্লবী , যিনি আমরণ অনশন চালিয়ে শহিদ হন ।

রাসবিহারী বসু ( ১৮৮৫ – ১৯৪৫ খ্রি. )

  • ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ২৩ ডিসেম্বর দিল্লিতে নবগঠিত রাজধানীর আনুষ্ঠানিক উদবােধন উপলক্ষ্যে বড়োলাট হার্ডিঞ্জ হাতির পিঠে চড়ে এক শােভাযাত্রায় বের হন । রাসবিহারীর পরিকল্পনা মাফিক বসন্ত বিশ্বাস দিল্লির চাঁদনিচকের এক বাড়ির ঝোলা বারান্দা থেকে হাতি লক্ষ করে বোমা ছোড়েন। হার্ডিঞ্জ আহত হন ও তাঁর অনুচর নিহত হন । বসন্ত বিশ্বাস ধরা পড়লেও রাসবিহারী পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে বারানসী হয়ে পাঞ্জাব চলে যান । শুরু হয় দিল্লি ষড়যন্ত্র মামলা , যার রায়ে বসন্ত বিশ্বাসসহ আমীরচাঁদ , অবোধ বিহারী , বালমুকুন্দ প্রমুখের ফাঁসি হয়। রাসবিহারীর মাথার দাম ধার্য হয় ১ লক্ষ টাকা ।
  • রাসবিহারী বসুর গােপন নির্দেশ অনুযায়ী বিপ্লবীরা পাঞ্জাবের সহকারী পুলিশ কমিশনার গর্ডন – কে হত্যা করার চেষ্টা করেন । কিন্তু এতে একজন চাপরাশির মৃত্যু ঘটে , গর্ডন সাহেবের কোনাে ক্ষতি হয়নি ।
  • ইউরােপে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে রাসবিহারী লাহােরকে কেন্দ্র করে উত্তর ভারতে এক গণবিদ্রোহ ও সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানাের পরিকল্পনা নেন । স্থির হয় ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি দুটি পাঞ্জাব রেজিমেন্ট বিদ্রোহ করবে । তারপর অন্য সেনা নিবাসের সেনারা তাতে যােগ দেবে । কিন্তু কৃপাল সিং নামে পুলিশের এক চর পুলিশকে সব জানিয়ে দিলে বিদ্রোহের দিন দুদিন এগিয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত হয়। গণ অভ্যুত্থানের সংবাদ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় রাসবিহারীর এই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। শুরু হয় লাহাের ষড়যন্ত্র মামলা ( ১৯১৫ খ্রি. ) । এই ষড়যন্ত্র মামলার রায়ে রাসবিহারীর দুই বিশ্বস্ত সহকর্মী কর্তার সিং ও বিষ্ণু গণেশ পিংলেসহ মােট ১৭ জনের প্রাণদণ্ড ও বহু বিপ্লবীর যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর হয়।
  • লাহাের ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর রাসবিহারী আর ভারতে থাকা নিরাপদ‌ নয় ভেবে পি. এন. ঠাকুর ছদ্মনাম নিয়ে এস. এস. সারুকিমারু জাহাজে করে জাপানে চলে যান।
  • ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে রাসবিহারী ক্যাপ্টেন মোহন সিং – এর সাহায্যে জাপানে যুদ্ধবন্দি ভারতীয়দের নিয়ে ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেনডেন্স লিগ গঠন করেন ।
  • এই মহান বিপ্লবী স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন নিয়ে জাপানেই শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন ( ১৯৪৫ খ্রি. )।

শ্রী অরবিন্দ ঘোষ

  • কলকাতার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে অরবিন্দ জন্মগ্রহণ করেন ( ১৮৭২ খ্রি. ১৫ আগস্ট ) ।
  • পিতা কৃষ্ণধন ঘােষ , মাতা ছিলেন স্বর্ণলতা দেবী এবং মাতামহ ছিলেন স্বনামধন্য চিফ মেডিকেল অফিসার রাজনারায়ণ বসু ।
  • দার্জিলিং সেন্ট পলস স্কুলে কিছুদিন পড়াশুনা করার পর মাত্র সাত বছর বয়সে তাঁকে লন্ডনের সেন্ট পলস স্কুলে ভরতি করা হয় ।
  • তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্ল্যাসিকাল টাইপস্ ( পার্ট ওয়ান ) পরীক্ষায় উচ্চ প্রথমশ্রেণিতে পাস করেন ( ১৮৯২ খ্রি. ) এবং সকল ক্লাসিক্স পুরস্কারগুলি লাভ করেন ।
  • দেশে ফিরে তিনি বরােদা রাজ কলেজে অধ্যাপক পদে যােগ দেন ।
  • অরবিন্দ ছিলেন একজন চরমপন্থী মতবাদের সমর্থক ।
  • তাঁর পরামর্শ মেনেই মানিকতলার বাগানবাড়িতে যুগান্তর দলের প্রধান কর্মকেন্দ্রটি গড়ে ওঠে ।
  • তিনি কে. জি. দেশপাণ্ডে সম্পাদিত ‘ ইন্দু প্রকাশ ’ পত্রিকাতে New Lamps for Old শীর্ষক প্রবন্ধমালায় কংগ্রেসের মূলনীতির ত্রুটি ও প্রাণশক্তির অভাব তুলে ধরে তীব্র ভাষায় সমালােচনা করেন ।
  • ভবানী মন্দির গ্রন্থে তিনি দেশমাতাকে শক্তির সঙ্গে তুলনা করেন ।
  • ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার মানিক তলায় মুরারী পুকুর বাগান বাড়িতে বােমা তৈরির সন্ধান পেয়ে পুলিশ অরবিন্দসহ মােট ৩৭ জন বিপ্লবীকে গ্রেফতার করে ।
  • গ্রেফতার হওয়া বিপ্লবীদের আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে আটকে রেখে শুরু হয় আলিপুর বােমা ষড়যন্ত্র মামলা ( ১৯০৮ খ্রি. ) ।
  • চিত্তরঞ্জন দাশের দক্ষ ওকালতিতে অরবিন্দ বেকসুর মুক্তি পান ( ১৯০৯ খ্রি. ৫ মে ) ।
  • আলিপুর বােমা মামলা থেকে মুক্ত হয়ে অরবিন্দ রাজনৈতিক জীবন থেকে অবসর নেন ।
  • এই আজন্ম বিপ্লবী মহাপুরুষের জীবনাবসান ঘটে ( ১৯৫০ খ্রি. ) ।

বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কে

  • বিপ্লবী বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কে মহারাষ্ট্রের কোলাবা জেলার শিরবো গ্রামের এক চিতপাবন বংশীয় ব্রাহ্মণ পরিবারে ১৮৪৫ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন ।
  • লর্ড লিটনের আমলে ফাড়কে গুপ্ত সমিতি গঠন ও সশস্ত্র বিপ্লববাদের মাধ্যমে ভারতে ব্রিটিশ রাজত্বের অবসান ঘটানাের চেষ্টা শুরু করেন ।
  • ফাড়কের পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যায় এবং ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে পুলিশ আহত ফাড়কেকে বন্দি করতে সক্ষম হয় ।
  • আরব দেশে এডেনের জেলে যক্ষ্মারােগে আক্রান্ত হয়ে ফাড়কের মৃত্যু হয় ( ১৮৮৩ খ্রি. ১৭ ফেব্রুয়ারি ) ।
  • ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার তাই তাঁকে ‘ ভারতের বৈপ্লবিক জাতীয়তাবাদের জনক ’ রূপে সম্মানিত করেছেন ।

স্যার সৈয়দ আহমদ খান (১৮১৭-৯৮)

  • স্যার সৈয়দ আহমদ খান আলিগড় আন্দোলন শুরু করেন মুসলিমদের মধ্যে আধুনিক শিক্ষা বিস্তার এবং সমাজ সংস্কারের জন্য।
  • ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মহাবিদ্রোহের সময় তিনি বিজনাের-এর সদর আমিন ছিলেন।
  • ‘On the Loyal Mahomedans of India’ নামক গ্রন্থে তিনি ভারতের মুসলমানদের শােচনীয় অবস্থার কথা তুলে ধরেন। তিনি মুসলমানদের তালাক দেওয়ার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তােলেন।
  • সৈয়দ আহমদ খান উর্দুতে তাহ জিব-উল-আখলক এবং আশবাদ-ই-ভাগবতী পত্রিকা প্রকাশ করেন ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে।
  • তিনি ইংরেজী ‘পাইওনিয়ার’ নামে আর একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন।
  • ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি গাজীপুরে একটি ইংরেজী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
  • ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন সায়েন্টিফিক সােসাইটি।
  • ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি ‘মহামেডান এডুকেশনাল কনফারেন্স’ প্রতিষ্ঠা করেন।
  • তিনি কমিটি ফর এ্যাডভান্সমেন্ট অফ লার্নিং অ্যামং দ্য মহামেডানস্ অফ ইন্ডিয়া’ নামে একটি সংস্থা গঠন করেন ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে।
  • ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি আলিগড়ে একটি আধুনিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন, যেটি ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে আলিগড় মহামেডান অ্যাংলাে ওরিয়েন্টাল কলেজে রূপান্তরিত হয়। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে এটি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।
  • ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে বেক ইউনিয়ন ইন্ডিয়ান প্যাট্রিয়টিক অ্যাসােসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন।
  • ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে স্যার সৈয়দ ইম্পিরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল’-এর সদস্য হন।

বিনায়ক দামোদর সাভারকর

  • বীর সাভারকর ম্যাৎসিনির ইয়ং ইতালির অনুকরণে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে মিত্রমেলা নামে একটি গুপ্ত বিপ্লবী সমিতি গঠন করেন । পরে ১৯০৪ সালে এটির নামকরণ হয় অভিনব ভারত ।
  • বােম্বাই ও পুনের কলেজগুলি ছাড়াও নাসিক , আমেদাবাদ , সাতারা প্রভৃতি শহরেও সাভারকরের প্রত্যক্ষ মদতে বিপ্লবীদের গােপন শাখা গড়ে ওঠে ।
  • ১৯০৬ সালে বিনায়ক লন্ডন চলে যান এবং সেখানে প্রবাসী ভারতীয় বিপ্লবীদের প্রধান কর্মকেন্দ্র ইন্ডিয়া হাউস – এর সঙ্গে যুক্ত হন । পরে ওই সংস্থার পরিচালনভার গ্রহণ করে সেখান থেকে গােপনে বােমা তৈরির নিয়মাবলি এবং প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ভারতে পাঠান । তিনি নিজে রুশ ভাষা থেকে ইংরেজি ভাষায় বােমা তৈরির কৌশল অনুবাদ করে তা ভারতে মির্জা আব্বাসের কাছে পাঠান ।
  • ১৯০৯ খ্রি. নাসিক জেলার জেলাশাসক জ্যাকসন – কে হত্যা করা হলে শুরু হয় ‘ নাসিক ষড়যন্ত্র মামলা ‘ । এই মামলায় প্রমাণিত হয় জ্যাকসন হত্যাকাণ্ডে বিনায়ক দামােদর সাভারকরের প্রচ্ছন্ন ভূমিকা আছে ।
  • সন্ত্রাস মূলক কাজে জড়িত সন্দেহে বিনায়ককে লন্ডনে গ্রেফতার করে ( মার্চ , ১৯১০ খ্রি. ) ভারতে পাঠানো হয় । বিচারে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আন্দামানে নির্বাসিত করা হয় । দেশবাসী তাঁকে বীর সাভারকর আখ্যা দেয় । এইভাবে ২৬ বছর কারাদণ্ড ভােগ করার পর বিনায়ক দামােদর সাভারকর মুক্তি পান । ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে এই মহান বিপ্লবীর জীবনাবসান হয় ।